সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলী
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সার্বিক চরিত্র গঠনে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর গুরুত্ব অপরিসীম। সারা বছর বিভিন্ন
সময়ে নিম্নলিখিত সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমসমুহ পড়াশুনার সাথে সাথে চালানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ পালন করেন। এ সমস্ত সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম শিক্ষার্থীদেরকে একজন সচেতন, শারীরিকভাবে যোগ্য ও মানসিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ মানুষে পরিণত হতে সাহায্য করবে ।
-
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা :
শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে সতেজ, সজীব ও প্রাণবন্ত করে গড়ে তোলার জন্য বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বছরের শুরুতেই অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে আয়োজন করা হবে। এ জন্য একটি মূল কমিটি এবং মূল কমিটির অধীনে অন্যান্য সাব-কমিটি গঠন পূর্বক যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করা হবে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সাথে সাথেই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সমূহ সম্পন্ন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বার্ষিক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা হিসেবে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে।
-
আন্ত:স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা:
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে যুক্তিবাদী, মননশীল, প্রশ্ন উপস্থাপন, প্রতিপক্ষের কথা গভীর মনোযোগ দিয়ে শোনা ও যথাযথভাবে উত্তর করার মানস তৈরির লক্ষ্যে আন্ত:স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রেণিভিত্তিক বাংলা ও ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করার জন্য শ্রেণি ভিত্তিক প্রতিযোগী নির্বাচন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রেণি থেকে বাছাইকৃত বিতার্কিকদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানের স্কুল টিম গঠন করা হবে এবং তারা পরবর্তীতে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করবে।
-
আন্ত:স্কুল সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা:
সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা শিক্ষার একটি অপরিহার্য অংশ। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চায় উৎসাহ যোগানো ও শিক্ষার্থীদের সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারায় নিয়ে আসা আমাদের কর্তব্য। সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায় অন্যদিকে তাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার মনোভাব গড়ে উঠে। এই প্রতিযোগিতাটি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সাথে সমান্তরালভাবে সম্পন্ন করা যেতে পারে।
-
আন্তঃস্কুল ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, দাবা, স্ক্র্যাবল, ক্যারম ইত্যাদি প্রতিযোগিতা:
শিক্ষার্থীদের শরীর গঠন ও স্বাস্থ্য রক্ষার প্রধান উপায় হলো বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা । জীবনে সফলতা আনতে যে, কর্মশক্তির প্রয়োজন হয়, খেলাধুলার মাধ্যমে তা অর্জিত হতে পারে। এ ছাড়াও এ ধরনের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার একঘেয়েমী দুর করে নির্মল আনন্দ লাভ করে থাকে। তাই প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের মাঝে আন্ত:স্কুল ফুটবল, ক্রিকেট,বাস্কেটবল, ভলিবল,হ্যান্ডবল,দাবা, স্ক্র্যাবল, ক্যারম ইত্যাদি খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। শ্রেণিভিত্তিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে উল্লেখিত খেলাধুলার প্রতিষ্ঠান টিম গঠন করা হবে । এই টিম অত্র এলাকার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে বয়স ভিত্তিক শ্রেণি (২ থেকে ৪) অংশে বিভক্ত হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।
-
আন্তঃস্কুল গণিত অলিম্পিয়াড, সাধারণ জ্ঞান, ভাষা প্রতিযোগ ইত্যাদি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিযোগিতা:
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর আন্তঃস্কুল গণিত অলিম্পিয়াড, সাধারণ জ্ঞান, ভাষা প্রতিযোগ ইত্যাদি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিযোগিদের মধ্য হতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত ও তাদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানে দল গঠন করা হবে। উক্ত দল পরবর্তীতে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করবে।
-
বিজ্ঞান মেলা:
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। তাই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে বিজ্ঞান চর্চা অপরিহার্য। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান ক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নতুন কিছু সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধনের লক্ষ্যে বাৎসরিক বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা আবশ্যক। প্রতি বছর ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হবে এবং তারা পরবর্তীতে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করবে।
জাতীয় ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিবস উদযাপন:
শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক ও তাদের মাঝে দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন জাতীয় দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে উদ্যাপনের আয়োজন করা হবে। স্কুল পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে উন্মুক্ত আলোচনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন, ধর্মীয় ও অন্যান্য কর্মকান্ডের মাধ্যমে দিবস সমূহ উদযাপন করা হবে ।
বার্ষিক শিক্ষা সফর/ বনভোজন:
শিক্ষা সফর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটি অংশ। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের নির্মল আনন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষা সফর ও বনভোজনের কার্যক্রম একই সাথে সম্পন্ন করা যেতে পারে। এ সকল কার্যক্রম নিম্নে বর্ণিত শ্রেণিভিত্তিক করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-
ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য তাদের শিক্ষা সফর প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে উপযুক্ত স্থানে আয়োজনের ব্যবস্থা করা হবে ।
-
১ম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস পার্টি প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরে ব্যবস্থা করা হবে ।
-
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জেএসসি পরীক্ষার পূর্বেই তাদের শিক্ষা সফর রংপুর অঞ্চলের মধ্যেই করার ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
-
নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর/বনভোজন বৃহত্তর বগুড়া ও রংপুর অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে হতে হবে ।
-
উল্লেখিত শিক্ষা সফর সমূহে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এ জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিবেন ।
-
শিক্ষার্থীদের অবশ্যই একই দিন প্রতিষ্ঠানে ফেরত আনতে হবে। শিক্ষা সফর সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ একটি সমন্বিত নির্দেশিকা (যাত্রাদেশ) অনুযায়ী নির্দেশিত হবে ।
ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায়: শিক্ষার্থীদের পিএসসি/এসএসসি পরীক্ষার পূর্বে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিদায় দেয়া হবে। বিদায়ের সময় বই/শিক্ষা সামগ্রী/ক্রেস্ট উপহার হিসাবে দেয়া হবে।
বর্তমানে অত্র এলাকার আর্থ সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে পরিচালনা পর্ষদের পূর্ণাঙ্গ সভায় অভিভাবক প্রতিনিধির মতামতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেতন নির্ধারিত করা হয় । বেতন নির্ধারিত করার পূর্বে একাধিক কমিটি বিভিন্নভাবে পর্যালোচনাপূর্বক একটি প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোপরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপনা করে । প্রস্তাবিত এই বেতন কাঠামো পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক সকলের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় ।
পরিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি ।